প্রেক্ষাপট ২০১৭ সালের আগস্ট মাস, এবারও তারা রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সেই একই “ধর্ষণ প্রোপ্যাগান্ডা” চালানো শুরু করলো। যার মাধ্যমে শান্ত আরাকানকে আবারও অশান্ত করা যায় এবং রোহিঙ্গাদের নতুন করে গণহত্যা করা যায়। জাতীয় নিরাপত্তা এবং সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য রোহিঙ্গাদেরকে হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে মিয়ানমার সরকার এবং সেনাবাহিনীকে উত্তেজিত করতে থাকে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। একই সাথে নিজেরাও সংঘবদ্ধ হতে থাকে আরাকান জুড়ে রোহিঙ্গা গণহত্যার উদ্দেশ্যে। এসময় তাদের সাথে ছিল উগ্র বৌদ্ধ সন্ত্রাসী আশীন উইরাথুর সমর্থকেরাও, যারা পরবর্তীতে আরাকান আর্মির বড় বড় নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
ঠিক এই সময়ে মিয়ানমার ইন্টিলিজেন্স এর ফাঁদে পা দিয়ে খারেজী ARSA ২০১৭ সালের ২৫শে আগস্ট মিয়ানমারের সীমান্ত চেকপোস্টে হামলা চালায়। ব্যস, এই এক ঘটনার রেশ ধরেই শুরু হয়ে যায় সমগ্র আরাকান জুড়ে এক ভয়ঙ্কর গণহত্যা। জান্তা বাহিনী এবং তাদের সহযোগী আরাকান আর্মি ও আশীন উইরাথুর সমর্থকেরা মিলে এই “Clearance Operation” শুরু করে।
শত শত গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষকে নৃশংস গণহত্যা করা হয়। ১৫-১৮ হাজার রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরীদের উপর নৃশংস গণধর্ষণ চালানো হয়। শিশুদের পুড়িয়ে মারা হয়, নদীতে নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয়। এই “Clearance Operation” এর প্রভাবে ১২ লক্ষ্য রোহিঙ্গা শরণার্থী হয়ে পড়ে। যারা বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালেশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যায়।
সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি ২০১৭ সালের মূল প্রেক্ষাপট তৈরি, রোহিঙ্গাদের দ্বারা ধর্ষণের মিথ্যা গুজব ছড়ানো এবং পুরো রাখাইনসহ মিয়ানমার সরকারকে উস্কে দিয়েছিল। আরাকান আর্মির পরিকল্পনা অনুযায়ী ইতিহাসের নৃশংস গণহত্যার শিকারে পরিণত হয় রোহিঙ্গা মুসলিম জাতিগোষ্ঠী। ২০১৭ সালের পর থেকে তারা এখন নিয়মিত রোহিঙ্গা নিধনে কাজ করছে। তাদেরকে প্রতিরোধ করা না গেলে রোহিঙ্গা জাতি চিরতরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। সুতরাং, এখনই সময় তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করা এবং সর্বাত্মক প্রতিরোধ ঘোষণা করা।